দীর্ঘ দিনের বেতন বঞ্চনার অবসানে 'বিজেপির দুয়ারে' উপস্থিত হলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা

দীর্ঘ দিনের বেতন বঞ্চনার অবসানে "বিজেপির দুয়ারে' উপস্থিত হলেন প্রাথমিক শিক্ষকরা



প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত "প্রাথমিক শিক্ষক একতা মঞ্চ'র সদস্য- সদস্যারা বিজেপির দুয়ারে উপস্থিত হলেন কারণ তারা অন্যান্য রাজ্যের মত নায্য বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয় বিগত তিন বছর যাবৎ এ রাজ্যে তাদের নায্য বেতনের দাবীতে নানা ভাবে আন্দোলন করে আসছেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী সমকাজে সমবেতনের অধিকারের লক্ষ্যে  তাদের লড়াই জারি আছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার নির্ধারিত PRT Scale দেশে সমস্ত রাজ্য চালু করলেও এ রাজ্য তারা সেটা পাচ্ছেন না। 

তাঁরা আরও জানান- বিগত কয়েক বছর ধরে তারা তাদের দাবি নিয়ে বার বার রাজপথ কাঁপিয়েছেন,বহুবার রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেননি। সব শেষে শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করতে বাধ্য হন। অনেক ঝড় ঝাঁপটা সহ্য করেও শিক্ষকরা টানা ১৪ দিন অনশন করে সরকারকে বাধ্য করেন বর্ধিত বেতনের G.O বের করতে। কিন্তু দেখা যায় এই সরকারী অর্ডারটি আরো একটি নতুন বঞ্চনার সৃষ্টি করেছে। জুনিয়র এবং সিনিয়র শিক্ষকদের মাঝে তুলে দেওয়া হয় বিভেদের দেওয়াল। হিসেব করে দেখা যায় ২০২০ সালে জয়েন করা কোনো শিক্ষকের বেতন ২০১৪ সালে জয়েন করা শিক্ষকের বেতন এক। এই সমস্যা না মিটিয়ে সরকার জোর করে পে-কমিশন লাগু করে দেয়। যার ফলে দেখা যায় প্রাথমিক শিক্ষকদের কেন্দ্রীয় সম বেতন তো দূর অস্ত রাজ্যের মাদ্রাসার অন্তর্ভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের থেকেও যথেষ্ট কম বেতন পাচ্ছেন। এই পার্থক্যটি কমবেশী গড়ে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজারের কাছাকাছি হয়ে গেছে।

প্রাথমিক শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের সেই বঞ্চনা, বৈষম্য তথা ন্যায়সঙগত দাবি নিয়ে টিম বর্ধমান ও টিম বীরভূমের যৌথ উদ্যোগে আসন্ন  বিধানসভা নির্বাচনে 'বিজেপির ইস্তেহার কমিটি'র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত মহাশয়ের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি সামগ্রিক বিষয়টি মন দিয়ে শোনেন এবং আগামীদিনে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। 



উপস্থিত প্রাথমিক শিক্ষকরা দাবী করেন যাতে বিজেপি দল হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষকদের কে যথেষ্ট মর্যাদা দিয়ে তাদের বর্তমান বেতন বঞ্চনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বেতন সংশোধনের বিষয়টি তাদের দলের ইস্তেহারে যেন জায়গা করে নেয়। 

প্রসঙ্গত উলেখ্য এর আগেও টিম বর্ধমান ও টিম বীরভূম যৌথ উদোগ্যে রাজ্য সভার সংসদ মাননীয় স্বপন দাশগুপ্ত মহাশয় ও ইস্তেহার কমিটির সম্পাদক মাননীয় অনুপম হাজরা ও বিধায়ক মনোজ টিগগা মহাশয়ের কাছে এই দাবী পত্র প্রদান করেন। এই কাজে তারা বীরভূম জেলার Intellectual Cell এর জেলা কনভেনার মাননীয় ডঃ উজ্জল মজুমদার ও সৌমেন শিকদার মহাশয়ের বিশেষ সাহায্য পেয়েছেন বলে জানালেন প্রাথমিক শিক্ষক অমিতাভ গরাই।

 


তবে "বর্তমান সরকারের কাছে না গিয়ে তারা বিজেপি নেতৃত্ববর্গের কাছে যাচ্ছেন কেন"?  এই প্রশ্নের উত্তরে অমিতাভ বাবু জানালেন যে তারা প্রত্যয়ী যে আসন্ন  বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গড়তে চলেছে সুতরাং তারা সঠিক জায়গায় গিয়েই তাদের বঞ্চনা তথা বেতন সংশোধনের আর্জি জানাচ্ছেন। 

তিনি অরো বলেন যে তাদের অরাজনৈতিক সংগঠনের আন্দোলন কে সমর্থন জানাতে বহু বিশিষ্ট বিজেপি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়েছিলেন। তাই তাদের বঞ্চনার বিষয়টি তারা সম্পূর্ণ ভাবে অবগত আছেন এমনকি তারা সেই সভায় এসে কথাও দিয়েছিলেন যে বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে প্রাথমিক শিক্ষকদের নায্য বেতন দেবেন। অমিতাভ বাবু জানালেন তারা আগামীদিনে সমস্ত সংসদ ও বিধায়কদের কাছে দাবীপত্র পেশ করবেন এবং শীঘ্রই সংগঠিত হয়ে বৃহত্তর  আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।


Post a Comment