উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান

উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর উদ্যোগে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান



গৌতম সাহা, ঝাড়গ্রামঃ

দেখতে দেখতে এসে গেল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। সারা বছরের প্রতিক্ষার পরে এই পূজাকে ঘিরেই গড়ে ওঠে পারিবারিক তথা নানা সামাজিক মিলন মেলা। পূজার দু একমাস অাগে থেকেই চলে নতুন জামা কাপড় কেনাকাটা। নতুন জামাকাপড় পরিধান করে পূজার মন্ডপ দর্শন এক নতুন আবেগের জন্ম দেয় মানুষের মনে। পূজার এই কদিনের আনন্দ চেটেপুটে উপভোগ করে বাঙালী। সারা বছর বাঁচার নতুন রসদ পেয়ে যায় তারা।

কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এবছরের প্রেক্ষাপট টাই পুরো আলাদা রকমের। গত ছয় মাস ধরে চলে আসা কঠিন সময়ে বহু মানুষ হারিয়েছেন তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম। দুমুঠো অন্নসংস্থান করতেই নাভিঃশ্বাস উঠছে তাদের। এই রকম পরিস্থিতিতে পরিবারের জন্য নতুন জামাকাপড় কেনাটা তাদের কাছে একটা বিলাসিতা হয়ে উঠেছে। এরকম এক পরিস্থিতিতে প্রায় শতাধিক মানুষের পাশে দাঁড়াল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন UUPTWA। আজ সকালে মূলতঃ ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির যৌথ উদ্যোগে এই সামাজিক অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড় ব্লকের মাধবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন ময়দানে। প্রায় শতাধিক মানুষের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিয়ে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করে নিলেন এই প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সদস্য-সদস্যারা। এই সংগঠনটির রাজ্য কমিটির সদস্য রঞ্জন কুমার বেরা জানালেন তাদের প্রিয় সংগঠনটি একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক সংগঠন,যার সদস্যগন পেশাগত স্বার্থ ও শিক্ষার অগ্রগতির জন্য আপোষহীন সংগ্রামের পাশাপাশি সারা বছর ধরে বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কাজে নিয়োজিত থাকেন। ইতিপূর্বে তারা পশ্চিম বঙ্গের প্রত্যেকটি জেলায় একাধিক স্থানে রক্তদান শিবির সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করেছেন। বন্যা,ঝড়,করোনা মহামারী প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর বিভিন্ন এলাকায় সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন তাদের সংগঠন। এমনকি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে যথাসাধ্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। এছাড়া বৃক্ষ রোপন কর্মসূচী, পাখিদের জন্য ফলের বাগান তৈরির মধ্যদিয়ে উস্থিয়ানগন পরিবেশ সচেতনতার এক অনন্য নজির তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন যা অন্যদেরকেও অনুপ্রাণিত করেছে।

করোনা অতিমারী সময় কালে উস্থিয়ানগন নিজ নিজ এলাকায় সামর্থ্য অনুযায়ী দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। দীর্ঘ সময় ধরে লক ডাউনের ফলে বেশির ভাগ মানুষ আজ দিশেহারা, এমতাবস্থায় তারা উদ্যোগী হন যাতে এ বছর তারা নিজেদের পরিবারের জন্য যেমন নতুন পোশাক পরিচ্ছদ কেনাকাটা করবেন পাশাপাশি দু একজন করে মানুষের হাতে নতুন পোশাক তুলে দিয়ে পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবেন। উস্থিয়ান সহযোদ্ধাদের স্বতঃস্ফূর্ত নিঃস্বার্থ সহযোগিতা এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করেছে। তারা সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে গিয়েছেন এক নতুন সকালের পথে।

সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ জানালেন এমন একটি অনুষ্ঠান সুসম্পন্ন হওয়ায় তিনি গর্বিত।কোরোনা মহামারীর কারণে যেখানে মানুষের দুবেলা দুমুুঠো অন্ন সংস্থান করাটাই একটা বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে সেখানে সাধারণ মানুষ তাদের পরিবারের হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দেবেন কি করে? তাই সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে এই জেলার সংগঠনের সদস্যরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দিয়ে যে মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন তা অনন্য।

Post a Comment